কবি কাজী নজরুল ইসলামের শহীদী-ঈদ কবিতার দুটি লাইন। কবি কী উদ্দেশ্যে এই কথা লিখেছিলেন, এর কী ব্যাখ্যা বা রূপক অর্থ কবির কল্পনায় ছিল, সেটা আমাদের আলোচ্য বিষয় নয়।
তার লেখা এই লাইনদুটি অনেকেই যে অর্থে ব্যবহার করে থাকে তা হল, বনের পশু কুরবানী না করে মনের পশুত্ব “কুরবানী” করুন! অর্থাৎ পশু কুরবানী করার কোন দরকার নেই। শুধু মনের পশুত্ব দূর করলেই হবে।
বাহ্যিক দৃষ্টিতে কথাটা চমকপ্রদ হলেও, সারবস্তুহীন কুৎসিত একটি কথা এটি। মনের পশুত্ব দূর হয়ে গেলে কি পশু কুরবানী করতে হবে না! মনের পশুত্বকে জবাই করার সাথে পশু কুরবানীর কী বিরোধ?!
পশু কুরবানীর ভেতর দিয়েই মনের পশুকে জবাই করতে হবে। কুরবানী কেবলই একটি প্রাণী জবাই করা নয়। এর ভেতর নিহিত রয়েছে অনেক তাৎপর্য। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। আল্লাহর বিধান।
আল্লাহ তাআলা বলেন, “কুরবানির পশুর রক্ত, মাংস কিছুই আল্লাহর কাছে পৌঁছে না। পৌঁছে শুধু তোমাদের তাকওয়া, খোদাভীতি।” – [সূরা হজ: ৩৭]
এই তাকওয়াই মানুষের ভেতরের পশুত্বকে বের করে মনুষত্ব সৃষ্টি করে।
আসুন, আমরা বনের পশুর সাথে মনের পশুত্বকেও কুরবানী করি, যেন আমাদের মন আল্লাহর বিধান বিনা প্রশ্নে মেনে নেয়। আল্লাহর বিধানের সামনে কোন খোঁড়া যুক্তি খুঁজে না বেড়ায়।